আমার প্রথম প্রেমিক, আমার নন্দলালা
আমার প্রথম প্রেমিক, আজ আপনার জন্মদিন। মাত্র ৮৫-র তরুণ আজ আপনি। সেই কোন এক কৈশোরে পাড়ার লাইব্রেরি থেকে এনেছিলাম একটা পাতলা বই। খেলা যখন পড়ার বইয়ের ফাঁকে রেখে পড়েছিলাম আর মনে মনে হয়ে উঠেছিলাম বুলবুলি। আমিও ওরই মত লাজুক, আমিও চেয়েছিলাম কোনও রাজার সামনে ভালোলাগায় কেঁপে উঠতে।আরও পড়ুনঃ যারা অদৃশ্য রয়ে গেলেনঃ শ্রমিক ঠিকাদার বা দালালতন্ত্র!আমার ওই ছোট্ট জগতে আপনি এলেন উর্দু শায়েরী, গজল, কবিতা আর কতশত নাম না জানা কবি-লেখকের লেখার উদ্ধৃতি নিয়ে। না, আর কোন নায়ক নয়, আপনারই মুখ ভেসে উঠত চোখের সামনে, শিকারি আপনি, লেখক আপনি, গায়ক আপনি, সুদর্শন আপনি, খাদ্যরসিক আপনি, আমার কিশোরী মনে জায়গা করে নিলেন। আরও পড়ুনঃ নদী কে জায়গা দিনঃ প্রসঙ্গ গঙ্গা ভাঙ্গনআরও ছোটোতে ম্যাথস বলে একটা গল্প পড়েছিলাম আনন্দমেলাতে। অংকে কাঁচা আমি ধরেই নিলাম আপনিও অংকে কাঁচা। মনে হলো কত মিল। চার্টার্ড একাউন্টেন্ট কাকে বলে বুঝিনি তখনও। ভালোই হয়েছিল, অত কিছু জানলে ভালোবাসতে ভয় করত। ভীষণ যেতে ইচ্ছে করত আপনার কাছে। সাহস পাইনি। শুনেছিলাম চিঠি লেখেন আপনি। কিন্তু আমি তো যোজনগন্ধা নই, যদি উত্তর না দেন , সেই মনখারাপটা সইতে পারব না, এই ভয়েই কখনও আর চিঠি লেখা হয়ে উঠল না।আরও পড়ুনঃ মনের ঘরের স্বজনআজও যাওয়া হয়ে ওঠেনি ম্যাকলাক্সিগঞ্জ-এ, কোয়েল নদীর কাছে, কানহাতে, হাটচান্দ্রা, বাংরিপোসিতে। হবে কি এ জীবনে? জানি না। অনেক পরে আপনার ঋভু পড়ে জেনেছিলাম আপনি পেশাগত কাজে আসতেন আমার শহর বহরমপুরে। কিন্তু তখন জানতেও পারিনি। জানলেও কি যেতাম আপনার কাছে? বোধ হয় না। সামনে এগিয়ে কথা বলতে পারি না আমি। তাই আপনাকে দেখতে হত ভিড়ের মধ্যে থেকে। আর ভিড়ের মধ্যে চোখে পড়ার মত অসাধারণ নই আমি তাই নজরে আসতাম না আমি। তার থেকে, এই ভালো, দূরে থেকে ভালোবাসা।আরও পড়ুনঃ মুকুল রায় তো বিজেপি পার্টির মেম্বার, বললেন মমতাভালো থাকুন বুদ্ধদেব, তরুণ থেকে তরুণতর হয়ে থাকুন আমার জীবনে। আমার প্রথম প্রেমিক, আমার নন্দলালা, হয়তো কোন এক জন্মদিনে আমার সাহস হবে আপনার সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর, সেদিনের সেই কিশোরী হয়ে যাব সেদিন, প্রথম শরবিদ্ধা, বাঁশপাতার মত কাঁপব আপনার সামনে দাঁড়িয়ে। আপনি হয়তো হাতটা বাড়িয়ে দেবেন আমার দিকে, ভালোলাগায়, দেবেন তো? শুধু এটুকুর আশাতেই তো বেঁচে থাকতে সাধ হয়, হে রাজর্ষি!সুদেষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়